
বাজার ভারসাম্য রাক্ষায় এবার মোবাইল ফোন টাওয়ার কোম্পানি ইডটকো-কে সিগনিফিকেন্ট মার্কেট পাওয়ার হিসেবে ঘোষণা করতে যাচ্ছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন বিটিআরসি। প্রতিষ্ঠানটির টাওয়ার সংখ্যা, আয় ও বাজারের একচেটিয়া আধিপত্য যেনো অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগেুলোকে গিলে ফেলতে না পারে সে জন্য ইডটকোর ওপর আরোপ করা হতে পারে সুনির্দিষ্ট বিধি নিষেধ। এর ফলে চাইলেও একটি নির্দিষ্ট সীমার ওপর ব্যবসা বাড়াতে পারবে না তারা।
ব্যবসায় প্রতিযোগিদের অভিযোগের প্রমাণ প্রাপ্তির পরিপ্রেক্ষিতে কমিশনারদের সর্বশেষ বৈঠকে ইডটকোর বিষয়ে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিটিআরসি। বিষয়টি অনুমোদনের জন্য এরই মধ্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে চিঠিও দিয়েছে কমিশন।
চিঠি বিষয়ে বিটিআরসি’র পর্যবেক্ষণের সঙ্গে অনেকটাই এক মত পোষণ করেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। বলেছেন, টাওয়ার কোম্পানির হিসেবে ইডটকো’র অবস্থা ‘এসএমপি’-তে দেওয়া মতো অবস্থায় পৌঁছেছে।
আরো পড়ুনঃ গুগল ম্যাপ কিভাবে আয় করে
তবে এ নিয়ে উত্থাপিত ‘বিভ্রান্তি’ বিষয়েও নিজের সতর্কতার বিষয়টিও আমলে নেয়ার কথা জানিয়েছেন মন্ত্রী।
অবশ্য বাণিজ্যিক ভারসাম্য রক্ষা করতে শেষতক ইডটকো বিধি নিষেধের আওতায় আসছে তা অনেকটাই নিশ্চিত হওয়া গেছে মন্ত্রীর সঙ্গে আলাপকালে।
সূত্র মতে, বাজারে নতুন টাওয়ার কোম্পানি আসার পর থেকে অস্বাভাবিক স্বল্পমূল্যে মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোকে বিভিন্ন প্যাকেজ দিয়ে বাজার অস্থিতিশীল করছে ইডটকো। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তিনটি টাওয়ার শেয়ারিং কোম্পানি সম্মিলিতভাবে এসএমপি নির্ধারণের বিটিআরসি-কে অনুরোধ করে।
টেলিযোগাযোগ সেবা সম্পর্কিত সব লাইসেন্সধারীর মধ্যে প্রতিযোগিতামূলক বাজার ব্যবস্থা বজায় রাখতে ২০১৮ সালের ২৮ অক্টোবর এসএমপি (সিগনিফিকেন্ট মার্কেট পাওয়ার) প্রবিধানমালা ২০১৮ প্রণয়ন করে বিটিআরসি। প্রবিধানমালার ধারা ৭ অনুযায়ী প্রতিযোগিতামূলক বাজার ব্যবস্থা বজায় রাখতে কমিশন ‘তাৎপর্যপূর্ণ বাজার ক্ষমতা’ নির্ধারণ করতে পারবে।
২০১৯ সালের নভেম্বরে এসএমপি প্রবিধান ঘোষণা করে বিটিআরসি। বিটিআরসির প্রবিধানের আওতায় প্রথমেই পড়ে দেশের শীর্ষ মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন। ওই বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি গ্রামীণফোনকে এসএমপি ঘোষণা করে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
এদিকে বিটিআরসি সূত্রে বলছে, ইডটকো বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেডের টাওয়ার সংখ্যা ১২ হাজার ৮৯৬টি। মার্কেট শেয়ার ৯২ দশমিক ২৩ শতাংশ। সামিট টাওয়ার্স লিমিটেডের টাওয়ার সংখ্যা ৫৪৭টি, মার্কেট শেয়ার ৪ দশমিক ১৮ শতাংশ। কীর্ত্তনখোলা টাওয়ার বাংলাদেশ লিমিটেডের টাওয়ার আছে ৯৭টি। এবি হাই-টেক কনসোর্টিয়ামের আছে ৪০৬টি। টাওয়ার কোম্পানিগুলোর হাতে রয়েছে ১৩ হাজার ৯৮৩টি টাওয়ার।
তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী, টাওয়ারের সংখ্যার দিক থেকে ইডটকোর মার্কেট শেয়ার ৯২ দশমিক ২৩ শতাংশ, রাজস্বের দিক থেকে ৯৮ দশমিক ৫৬ শতাংশ। বাজার নিয়ন্ত্রণের শতকরা হারও ৪০ শতাংশের বেশি। প্রবিধানমালায় বলা আছে, যেকোনও একটি নির্ণায়কের হার ৪০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেলে তা ওই বাজারের জন্য এসএমপি হিসেবে সংজ্ঞায়িত হবে। ইডটকোর দুটি নির্ণায়কই ৪০ শতাংশের বেশি।